Monday, September 15, 2025
Homeজাতীয়অপরাধরাজশাহীতে প্রকাশ্যে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দিলেন কলেজছাত্রী

রাজশাহীতে প্রকাশ্যে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দিলেন কলেজছাত্রী

রাজশাহী মহিলা কলেজের এক ছাত্রী থানায় গিয়েছিলেন স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। পুলিশ তাঁকে তাদের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ দেন। থানা ও ভিকটিম সেন্টার একই কম্পাউন্ডের মধ্যে। সেখানে গিয়ে মেয়েটি শুধু নিজের নাম লিখেছেন। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে বাইরে আসেন। এরপর থানা থেকে খানিকটা দূরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তিনি প্রকাশ্যে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে শাহ মখদুম থানায় এই ঘটনা ঘটে। এই কলেজ ছাত্রীর নাম লিজা রহমান। বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজশাহী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। লিজা দত্তক মা-বাবার কাছে বড় হচ্ছেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে লিজার দত্তক মা-বাবার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁদের একটি মাত্র ছেলে সন্তান। তাই তাঁরা লিজাকে দত্তক নিয়েছেন, লেখা-পড়া করিয়ে আসছেন। কয়েক মাস আগে তাঁরা জানতে পারেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের এক ছেলের সঙ্গে আদালতে গিয়ে লিজা বিয়ে করেছেন। তাঁরা রাজশাহী শহরে একটি ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করেন। পাঁচ বছর পর স্বামীর পড়া-শোনা শেষ হলে বিষয়টি নিজেদের পরিবারকে জানানো হবে বলে তাঁদের দুজনের মধ্য চুক্তি ছিল। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই ছেলের পরিবারের লোকজন বিষয়টি জেনে যায়।

লিজার ভাই (দত্তক বাবার ছেলে) সাংবাদিকদের বলেন, বিয়ের বিষয়টি জানার পর ছেলের পরিবার স্থানীয় এক চেয়ারম্যানকে দিয়ে লিজার মাকে (দত্তক মা) ফোন করায়। চেয়ারম্যান বলেছে, যেন ছেলের বাড়িতে মেয়ে না আসে। এলে মেয়েকে মেরে ভ্যানে করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী শাহ মখদুম থানা থেকে খানিকটা দূরে মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক আফরোজা নাজনিন বলেন, মেয়েটার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁর শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাঁকে ঢাকায় শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে পাঠানো হয়েছে।

শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, ওই মেয়েটি থানায় অভিযোগ করতে এসেছিল। তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এ ধরনের বিষয় সাধারণত ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিষ্পত্তি করা হয়। একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তাঁকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে মেয়েটি শুধু তাঁর নাম লিখেছেন। তারপর বলেছে, পরে এসে অভিযোগ করবে। এর তিনি সেখান থেকে বের হয়ে যান। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে আগুন দেওয়ার এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, থানা থেকে বের হওয়ার পরপরই ওই শিক্ষার্থীর পার্শ্ববর্তী কোনো দোকান থেকে কেরোসিন ও দেশলাই সংগ্রহ করেছিলেন। থানাটি বাজারের মধ্যে হওয়ায় সেখানে প্রচুর দোকান রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments