Sunday, September 14, 2025
Homeরাজধানীশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি প্রত্যাখ্যান, কর্মসূচী ঘোষণা আন্দোলনকারীদের

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি প্রত্যাখ্যান, কর্মসূচী ঘোষণা আন্দোলনকারীদের

শিক্ষামন্ত্রীর নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৬ মে) দুপুরের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আগামী ১৩ জুন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি খুব বেশি প্রতিকূল না হলে আগামী ১৩ জুন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও একদফা বাড়লো

শিক্ষামন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান এবং নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আজ শিক্ষামন্ত্রী চলমান ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করলাম। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় সেশনজটে পড়ে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর চাকরি ও টিউশনিও নেই।

অপরদিকে, একটি দৈনিক পত্রিকার জরিপে দেখা গেছে, গত ৫ মাসে প্রায় ৩৯ জন ঢাবি শিক্ষার্থী নিজ এলাকায় হামলার শিকার হয়েছেন। ৮০ জন শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়েছেন। সবশেষ, ঢাবি ক্যাম্পাসেই ঢাবি ছাত্র হাফিজুর রহমানের অস্বাভাবিক ও নির্মম মৃত্যু আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা বলতে চাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাই এসবের জন্য দায়ী।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বর্ধিত করার পেছনে তিনি করোনা পরিস্থিতি ও ভ্যাক্সিনের অপর্যাপ্ততাকে দায়ী করেছেন। অথচ করোনা পরিস্থিতিতে কল-কারখানা, অফিস, শিল্পপ্রতিষ্ঠান; এমনকি গণপরিবহন কোনো কিছুই থেমে থাকেনি। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অপরদিকে, ভ্যাক্সিন নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী সরকারি নীতি-নির্ধারক ও তাদের করপোরেট প্রতিষ্ঠান। 

পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউনিসেফের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মতো এতো দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশসহ কেবল ১৩ দেশে। এ ১৩ দেশের মধ্যে রয়েছে পানামা, বলিভিয়া, এল সালভাদরের মতো দেশগুলো। আর এসব দেশে এ দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ১৬৮ মিলিয়ন শিক্ষার্থী।

এছাড়া ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এ গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সময় কমে গেছে ৮০ শতাংশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে এর সূত্রমতে, দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর দৈনিক ১৮ কোটি শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে এ বন্ধের কারণে।

পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আমরা আবারও বলতে চাই, ১২ জুন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্ধিত এ ছুটি আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছি। আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবে। একই সঙ্গে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব উপাচার্য বরাবর এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments