Monday, September 15, 2025
Homeজাতীয়অপরাধপরিমনির মামলায় নাসির উদ্দিনসহ গ্রেফতার ৫

পরিমনির মামলায় নাসির উদ্দিনসহ গ্রেফতার ৫

ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও হুমকির অভিযোগে করা অভিনেত্রী পরী মনির মামার প্রধান আসামি উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় বেশকিছু বিদেশি মদ উদ্ধার ও তিন জন নারীকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুন) সকালে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন অভিনেত্রী পরী মনি। মামলায় অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ও তুহিনসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা সন্ধান পেয়েছি উত্তরায় একটি বাসায় ডিজে পার্টি করা হয়। পরে আমরা অভিযান চালাই। এসময় তিন জন রক্ষিতা নারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাসির রক্ষিতা রেখে তিনি এসব কাজই করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, রাত ৮-৯টার পর ঢাকায় কোনো ক্লাবে উঠতি বয়সের কোনো মেয়েদের পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদের দাবি, বাসায় যে সব আলামত পাওয়া গেছে তা তার বাসায় ছিল না।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নাসির উদ্দিন মাহমুদ (৫০), ছয় জনের বিরুদ্ধে এ মর্মে এজাহার দায়ের করছি যে ৮ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় আমার বর্তমান ঠিকানার বাসা থেকে আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি, বনিসহ দুটি গাড়িযোগে উত্তরার উদ্দেশে রওনা হই। পথিমধ্যে অমি বলে, বেড়িবাঁধের ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার দুই মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। তখন অমি অনুরোধ করে, এখানে পরিবেশ সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো। আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে ঢুকে টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর ১ নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১ নম্বর আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন।

পরী মনি এজাহারে আরও লিখেছেন, মদ্যপান করতে না চাইলে ১ নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল ঢুকিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমি সামনের দাঁত ও ঠোঁটে আঘাত পাই। ১ নম্বর আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে এবং আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ১ নম্বর আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারে। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১ নম্বর আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাঁকেও মারধর করে। এ সময় আমি ৯৯৯–এ কল করতে গেলে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি টান মেরে ফেলে দেওয়া হয়। ২ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা চারজন ১ নম্বর আসামিকে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে।

রবিবার (১৩ জুন) রাতে পরী মনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ তুলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। প্রতিকার চেয়ে তিনি বনানী থানায় গিয়ে কোন সাড়া পাননি বলে অভিযোগ করেন।

ওই দিন রাতে এক ফেসবুক পোস্টে বিচার চেয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য কামনা করেন পরী মনি। যাতে তিনি অভিযোগ করেন যে সম্প্রতি তাকে ‘ধর্ষণ এবং হত্যা করার চেষ্টা’ করা হয়েছে। বনানী থানার পুলিশ রবিবার বলেছিল, তারা কোনো অভিযোগ পায়নি। রবিবার রাতেই বনানীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী। এ সময় তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন।

অভিযোগে তিনি জানান, ঘটনার পর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিনি বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন, সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা তার অভিযোগ রেকর্ড করেননি। এরপরে গত চারদিনেও তিনি বিভিন্নভাবে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছেন। একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী তাকে বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments