Monday, September 15, 2025
Homeসারাদেশচট্টগ্রামচট্টগ্রামে বাড়ছে আফ্রিকান বিটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা

চট্টগ্রামে বাড়ছে আফ্রিকান বিটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা

চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা রোগী। বিশেষ করে নতুন ধরনের করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে গত দুই সপ্তাহ ধরে রোগীর চাপ বাড়ছে। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. আব্দুর রব বলেন, জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করা রোগীদের মধ্যে আইসিইউতে ছিলেন ১০ জন ও মধ্যম মাত্রায় অসুস্থ ১৪ জন। তাদের জিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আইসিইউতে ভর্তি জটিল রোগীদের ৮০ শতাংশ দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা ভাইরাসের ধরনটিতে আক্রান্ত। মধ্যম মাত্রায় অসুস্থ রোগীদের ৭৫ শতাংশ বিটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নেওয়া পাঁচ জন রোগী ছিলেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগে কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়ায় দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহন হচ্ছে। করোনার ঊর্ধ্বমুখীর মধ্যে মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে। হোটেল, রেস্তোরাঁ, কাঁচাবাজার সর্বত্র মানুষের ভিড়। মাস্ক ছাড়াই মানুষ চলাফেরা করছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রতিদিন অভিযান চলছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ও চট্টগ্রামে ১০টি ল্যাবে ৯১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ২২৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত এপ্রিল ও মে মাসে চিকিত্সা নিতে আসা জটিল কোভিড রোগীদের ৮০ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা ভাইরাসের বিটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন। চট্টগ্রামে সাতটি করোনা পরীক্ষাগার থেকে ৪২টি নমুনা সংগ্রহ করে তার ভ্যারিয়েন্ট পরীক্ষা করা হয়। এতে দুটি ভারতীয় ডেলটা, তিনটি নাইজেরিয়ান ইটা, চারটি যুক্তরাজ্যের আলফা ও ৩৩টি দক্ষিণ আফ্রিকার বিটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। গত মে মাসের শেষের দিকে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনা রোগী আগের চেয়ে বাড়ছে। শহরের চেয়ে উপজেলায় করোনা রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। অবস্থা বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘হাসপাতালে ১১৭ জন করোনা রোগী চিকিত্সাধীন আছেন। গত দুই সপ্তাহ যাবত্ রোগী বাড়ছে। পাঁচ জন রোগী আইসিইউতে চিকিত্সা নিচ্ছেন।’

গণপরিবহনে যাত্রীর ভিড়, দ্বিগুণ ভাড়া আদায় : এদিকে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেও মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা বেড়েই চলেছে। গণপরিবহনের ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায়ের সরকারি নির্দেশ রয়েছে। প্রথম দিকে এই নির্দেশনা কার্যকর থাকলেও এখন অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্ত মানা হচ্ছে না। বাস, টেম্পু, হিউম্যান হলার, ম্যাক্সিমাসহ সব গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন চলছে। ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ বেশি। এ নিয়ে ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা ঘটছে। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

জানতে চাইলে সিএমপি ট্রাফিক বিভাগ (উত্তর) উপ-কমিশনার আলী হোসেন বলেন, ‘মাঝখানে কিছুদিন ঢিলেঢালাভাবে চলছে। স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরে এখন পুরো সিএমপি এলাকায় বিশেষ অভিযান চলছে।’ এ ব্যাপারে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শান্তুনু দাশ বলেন, ‘বিআরটিএর দুই জন ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছেন। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় প্রতিদিন ২০-২৫টি মামলা দেওয়া হচ্ছে। জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। তবে সড়কে গাড়ির চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments