Monday, September 15, 2025
Homeরাজধানীনারী ধর্ষণের বিচারসহ ছয় দফা দাবিতে সমাবেশ আদিবাসীদের

নারী ধর্ষণের বিচারসহ ছয় দফা দাবিতে সমাবেশ আদিবাসীদের

টাঙ্গাইলের সখিপুরে কোচ আদিবাসী নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও আদিবাসী যুব ফোরাম আয়োজিত সমাবেশের বক্তারা। শুক্রবার সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও বাংলা আদিবাসী যুব ফোরামের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জোবাইদা নাসরীন কণা, আদিবাসী ফোরামের সদস্য চঞ্চনা চাকমা, আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনি ম্যাথিউ চিরান, গারো ছাত্র সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বুশ নকরেক, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগ শাখার সাধারণ সম্পাদক রেঙ ইয়ং ম্রো, কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক চন্দন কোচ প্রমূখ। এতে সংহতি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বর্মন যুব পরিষদ, হাজং স্টুডেন্টস কাউন্সিল, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশন।

যুব ফোরামের সভাপতি অনন্ত বিকাশ ধামাই এর সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থাপিত অন্য দাবিগুলো হচ্ছে- পর্যটন কেন্দ্র ও উন্নয়নের নামে সিন্ধুকছড়িতে আদিবাসীদের ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে; মধুপুরে গারো আদিবাসীদের প্রাচীন মাংরুদাম (শ্মশান) এর উপর সীমানা প্রাচীর ও গেস্ট হাউস নির্মাণ বন্ধ করতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে; সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে এবং আদিবাসীদের নামে হয়রানিমূলক সকল মিথ্যা বন মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

জোবাইদা নাসরীন বলেন, পাহাড় এবং সমতলে আদিবাসীদের উপর নিপীড়ন ও ভূমি বেদখল যেন রাষ্ট্রে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো আদিবাসীদের ভূমিতে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ ও খাগড়াছড়ির সিন্ধুকছড়িতে ত্রিপুরা আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র তারই অন্যতম স্বাক্ষ্য বহন করে।

রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে যখন প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন, তখন উন্নয়নের নামে আদিবাসীদের ভূমি ও ভিটেমাটি এবং তাদের শ্মশান বেদখল করে নিয়ে যাচ্ছে একদল স্বার্থান্বেষী মহল। তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইলের সখিপুরে কোচ আদিবাসী নারীর ওপর অমানবিক যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের মত ঘটনা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাকর ও অত্যন্ত পীড়াদায়ক। বাংলাদেশ একটি বহু ভাষা, বহু জাতি ও বহু সংস্কৃৃতির দেশ। এই বহুত্ববাদই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সৌর্ন্দয বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্র এই বহুত্ববাদকে অস্বীকার করে আদিবাসীদের ওপর ক্রমাগত দমন-পীড়ন, নির্যাতন নিপীড়ন করেই চলেছে। বরং রাষ্ট্রের দায়িত্ব দেশে বসবাস করা আদিবাসীদের সুরক্ষা করে এই সৌন্দর্য বজায় রাখা।

সম্প্রতি কোচ আদিবাসী নারীর ওপর যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ এবং মধুপুরের টেলকিতে বনবিভাগ কর্তৃক গারোদের শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানে (মাংরুদাম) সীমানা প্রাচীর ও গেষ্ট হাউজ নির্মাণের প্রতিবাদ জানান এ শিক্ষক।

চঞ্চনা চাকমা বলেন, বাংলাদেশে আদিবাসী নারীর ওপর নির্যাতন, সহিংসতা ও ধর্ষণের মতো পাশবিক ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ ঘটনাগুলোর অধিকাংশই গণমাধ্যম ও জনসম্মুখে প্রকাশ পায়না। তাই এ ধরণের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য রাষ্ট্রের যথার্থ ভূমিকা রাখা দরকার বলে মনে করেন আদিবাসি এই নেত্রী।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments