Tuesday, September 16, 2025
Homeজাতীয়আইন আদালতপ্রথম আলোর কাছে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

প্রথম আলোর কাছে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোর কাছে একশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কলেজের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। রিট আবেদনে কলেজের জন্য ৫০ কোটি টাকা আর নিহত আবরারের পরিবারের জন্য ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

কলেজটির অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের করা এ রিট আবেদনটির ওপর শুনানি মূলতবি করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, শুধুই কলেজ নয়, ভিকটিমের (নিহত আবরার) পরিবারকে আদালতে আসতে হবে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি মূলতবি করে ১৫ জুলাই আদেশ দেন। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম আবদুর রউফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে আবরারের পরিবারের জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কলেজটির সাবেক এক শিক্ষার্থী ওবায়েদ আহমেদ ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর পৃথক একটি রিট আবেদন দাখিল করেন। ওই রিট আবেদনটির ওপর শুনানি মূলতবি করেন একই আদালত। তখনও আদালত বলেছিলেন, আবরারের পরিবার যদি ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোনো আবেদন করে তবে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ওই রিট আবেদনকারীরা আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের জন্য আদালতে আনতে পারেনি। ফলে ওই রিট আবেদনটির আর শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ নতুন করে রিট আবেদন দাখিল করলো। গত জুনে এই রিট আবেদন দাখিল করা হয় বলে জানান আইনজীবী।

অ্যাডভোকেট এস এম আবদুর রউফ জানান, সারা পৃথিবীতে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের সুনাম রয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় কলেজটির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। দেশের অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষের ধারণা ওই দুর্ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষেরও অবহেলা রয়েছে। কিন্তু তা নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোর সঙ্গে অনুষ্ঠানের যে চুক্তি করে তাতে কার কি দায়দায়িত্ব তা উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার দায়িত্ব ছিল প্রথম আলোর আয়োজকদের। তিনি বলেন, প্রথম আলোর দায়িত্বহীন কর্মকান্ডের কারণে কলেজের সুনাম ক্ষন্ন হয়েছে। একারণে কলেজের জন্য ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। আর নিহত আাবরারের পরিবারের জন্য ৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, একটি ছাত্রের আইনগত অভিভাবক হলো তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর পিতা তার পিতা হলো প্রকৃতিগত অভিভাবক। একারণেই কলেজ কর্তৃপক্ষ এই রিট আবেদন দাখিল করেছে। তিনি বলেন, নিয়মিত আদালত খোলার পর আবেদন সংশোধন করা হবে। কলেজের পাশাপাশি আবরারের পিতাকেও আবেদনকারী করা হবে। এরপর শুনানির জন্য রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।

গত ১৫ জুলাই রিট আবেদনটি হাইকোর্টে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়। কলেজের পক্ষে আইনজীবী রিট আবেদনের বিষয় উপস্থাপন করলে আদালত বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের দায় এড়ানোর জন্য কি এই রিট আবেদন করেছে? ওই ঘটনায় তাদের কি কোনো দায় নেই? জবাবে আইনজীবী বলেন, এখানে কলেজের কোনো গাফিলতি নেই। একারণে ওই ঘটনায় কলেজের কোনো দায় নেই। এসময় তিনি রুল জারির জন্য আদালতের কাছে আবেদন করলে আদালত কোনো আদেশ দিতে অস্বীকৃতি জানান। আদালত বলেন, মারা গেছে যে ছাত্র। তার পরিবারের কেউ আবেদনকারী নয়। আইনজীবী বলেন, ৫০ কোটি টাকা কলেজের জন্য আর ৫০ কোটি টাকা ভিকটিমের পরিবারের জন্য চাওয়া হয়েছে। এসময় আদালত বলেন, ভিকটিমের পরিবারের কেউ আসলে দেখা যাবে। এসময় আইনজীবী ভিকটিমের পিতাকে আবেদনকারী করার জন্য সময় আবেদন জানান এবং রিট আবেদনটি মূলতবি রাখার আরজি জানান। এরপর আদালত শুনানি মুলতবির আদেশ দেন।

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী কিশোর আলোর উদ্যোগে ২০১৯ সালের পহেলা নভেম্বর শিক্ষার্থীদের এক অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে নাইমুল আবরার রাহাত বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনার জন্য আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আবরারের পিতা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে ওইবছরের ৬ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন। এই মামলায় গতবছর ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আদালত মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মতিউর রহমান হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। আর অন্যরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments