Sunday, September 14, 2025
Homeসাভারআশুলিয়াআশুলিয়ায় ১৮ জুয়েলারি দোকান লুট

আশুলিয়ায় ১৮ জুয়েলারি দোকান লুট

সাভারের আশুলিয়ায় নয়ারহাট বাজারে পুলিশ পরিচয়ে একটি জুয়েলারী মার্কেটের ১৮টি দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাত দলের সদস্যরা বাজারের নিরাপত্তাকর্মী ও দোকান কর্মচারীদের মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে আটকে রেখে দোকানে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে।

সোমবার ভোররাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারের জুয়েলারি মার্কেটে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হাসান সরদারসহ পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বাজারের নিরাপত্তা কর্মীদের ইনচার্জ মোঃ বাবুল জানান, রাত ১টার দিকে আমি বাজারে টহলরত অবস্থায় দেখতে পাই দুটি স্যালু নৌকাযোগে প্রায় একশ লোক বাজারে নামছেন। প্রথমে আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি তারা ডাকাত দলের সদস্য। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন ব্যক্তি আমার কাছে এসেই আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করতে থাকে। এরপর আমাকে চোখ বেঁধে একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে তিন ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি করে ভোররাত ৪টার দিকে স্যালুযোগে দক্ষিণ দিকে চলে যায়।

পার্থ জুয়েলারীর কর্মচারী জয়ন্ত বলেন, রাত দুইটার দিকে আমি খেলা দেখে শুয়ে পড়ি। এসময় বাহিরে থেকে আমাদের দোকানে শাটার ভেঙ্গে মুখে মাস্ক পরিহিত ১০-১২ জনের একদল ডাকাত আমার দিকে অস্ত্র তাক করে গুলি করার ভয় দেখিয়ে কেচিগেট খুলতে বলে। না খুললে আমাকে গুলি করার ভয় দেখায় তারা। একপর্যায়ে আমি দোকান খোলে দিলে ২০-২৫ জনের একদল ডাকাত আমাকে গামছা দিয়ে হাত বেঁধে অন্য একটি দোকানে নিয়ে আটকে রাখে। পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, ডাকাতির খবর শুনে সকালে আমি বাজার কমিটির লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আমাদের বাজারের ইতিহাসে এতো বড় ডাকাতির ঘটনা কখনও কল্পনা করিনি।

সাথী জুয়েলারীর কর্মচারী সুশান্ত সরকার বলেন, রাত দেড়টার দিকে আমাদের কেচিগেটের তালা খুলার শব্দ পাই। আমি কে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় আমরা পুলিশের লোক। এ কথা শেষ না হতেই শাটার খুলে তারা ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের দোকানে থাকা দুই জনকে মারধর করে হাত বেঁধে রেখে চাবি নিয়ে নেয়। পরে ৬ জন ডাকাত দোকানে থাকা নগদ এক লাখ ২৪ হাজার টাকা, ১৬ ভরি স্বর্ণ এবং ৩৫ ভরি রূপা নিয়ে যায়। ডাকাতরা আমাদেরকে তিন ঘন্টা অন্য একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখে। সেখানে প্রায় ২৫ জনের মতো লোককে আটকে রেখেছিলো। ডাকাতদের সবার হাতে দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র ছিলো।

বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে পৌছে ভুক্তভোগীদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক বরারব একটি দরখাস্ত দিতে বলেছেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের আর্থিক সহযোগীতার জন্য আবেদনে উল্লেখ করা হবে। ডাকাতরা বংশী নদী দিয়ে স্যালুতে করে আসে এবং বাজারের ১৮টি দোকানে ডাকাতি করে প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, রাতে বেশ কয়েকটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির খবর পেয়ে আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছে বিষয়টি তদন্ত করছে। আমিও ভোক্তভোগীদের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেছি। যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে যা যা পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments