Friday, September 12, 2025
Homeসারাদেশঅপরাধকুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন রেখে আসা ইকবাল পাগল

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন রেখে আসা ইকবাল পাগল

যে ঘটনা থেকে দুর্গাপূজার মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়েছে বিভিন্ন স্থানে, কুমিল্লার নানুয়াদিঘীর পাড়ে সেই পূজামণ্ডপে ‘কুরআন রেখে আসা’ এক যুবককে সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে, সিসিটিভির ফুটেজের সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ভাই রায়হান। কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন ইকবালের পরিবার।

শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি ইকবাল হোসেন সুজানগর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের বড় ছেলে। ইকবালের ছোটভাই রায়হান বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজের এই মানুষ আমার ভাই। সে পাগল। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে খেলার মাঠে তাকে নিয়ে ছেলেপুলেরা দুষ্টুমি করায় সে সবাইকে জুতা দিয়ে মেরেছিল। তবে নেশা করে কিনা সেটা আমি জানি না। সে যে মানুষ মাকে পাথর নিয়ে মারতে চায় সে বুঝে শুনে এমন কাজ করার কথা না। ওকে চা-পানি, নাস্তা করালে যা বলবে তাই করবে।’

ইকবালের মা বিবি আমেনা বলেন, ইকবাল মানসিকভাবে অসুস্থ। তার মা দাবি করেন, বখাটেপনার কারণে গণপিটুনির শিকার হন ইকবাল। এরপর থেকে তার আচরণে সবাই অতিষ্ঠ। ইকবালকে পেলে আপনারা বিচার করবেন। এই সন্তানের জন্য আমার পরিবারটা শেষ হয়ে গেছে।

ঘটনার পর থেকে ইকবালের বাবা পুলিশকে সহায়তা করছেন বলেও জানান ইকবালের মা বিবি আমেনা ও ভাই রায়হান।

এদিকে, গতকাল বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভির ভিডিওটি আমি দেখেছি। এতে দেখা যাচ্ছে এক যুবক মসজিদ থেকে কোরআন শরিফ নিয়ে রাস্তার দিকে আসছে। কিছুক্ষণ পর (প্রায় এক ঘণ্টা পর) দেখলাম তার হাতে কোরআন শরিফ নেই। হনুমান ঠাকুরের গদা হাতে নিয়ে তিনি ঘোরাঘুরি করছেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি গতকালও বলেছি তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই যুবক মোবাইল ব্যবহার না করার কারণে তাকে ট্র্যাক করা যাচ্ছিল না। এখন পর্যন্ত তিনি ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছেন। আমরা তাকে নজরদারিতে রেখেছি। যে কোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’

গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগরীর নানুয়া দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা নিয়ে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিভিন্ন থানায় আট মামলায় ৭৯১ জনকে আসামি করা হয়ে। এরমধ্যে কোতোয়ালী মডেল থানায় পাঁচটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি ও দাউদকান্দি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলায় ৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কুমিল্লার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় উপাসনালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। চাঁদপুরে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments