দেশে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আপাতত’ এসব পণ্যের দাম কমে আসার সম্ভাবনা কম। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ৩১ দফা নির্দেশনার ১৭ নম্বর নির্দেশনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে বলেছেন, সেখানে নিয়ন্ত্রন দুরের কথা নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যমুল্যের লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধির কারণে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা অভূক্ত, অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এক বছর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব ও খাদ্য সংস্থা বাজার পরিস্থিতি এমন হতে পারে বলে অনুমান করেছিলো। তাদের বক্তব্য, বাজারে পণ্যের কোন ঘাটতি নেই। তারপরেও চাল ছাড়া সব পণ্যের দাম বেড়েছে বা বাড়ছে। সরকার কখনো কখনো কোন পণ্যের শুল্ক কমিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলছেন, “কিন্তু আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে যেগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।”
ট্যারিফ কমিশনের সম্প্রতি অবসরে যাওয়া সদস্য আবিদ খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাজারে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা থাকলে হয়তো দ্রব্যমূল্য হাতের নাগালে রাখা সরকারের জন্য সহজ হতো।
আবিদ খান বলেন, কোভিড পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়াসহ নানা যৌক্তিক কারণেই অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে কিন্তু স্টকে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকার পরেও পেঁয়াজের দাম বাড়বে কেন। এজন্যই প্রতিযোগিতার দরকার।
ঢাকার মিরপুর ১১ নম্বরের বাজারে নিয়মিত বাজার করেন রোজিনা সুলতানা। তিনি বলছেন, “এমন কোন পণ্য নাই যার দাম বাড়েনি। সব দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ, কোন কোন পন্যমুল্য তো নাগালেরই বাইরে। কমার কোন লক্ষ্মণও তো দেখিনা।”
ফুটপাতের কাপড় বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন বলছেন, ” সারাদিন ধরে কাপড় বিক্রি করে একহাজার টাকা রোজগার করতে পারছিনা, ফুটপাতের স্থানীয় দখলদারকে ৯০ টাকা, ফাঁড়ির পুলিশকে দিতে হয় ৩৫ টাকা করে প্রতিদিন। বাকী টাকায় ঘরের ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল এগুলো দিবো, না খাবো। তিনমাস হলো বিল দিতে না পারায় অন্ধকারে আছি। জিনিষপত্রের দাম কমার লক্ষনও দেখিনা, অন্ধকারে থেকেই সামনে আরো অন্ধকারই যেন দেখছি।”
ইসমাইল হোসেনের অভিযোগ, “নেত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে যেভাবে আমাদের মত গরীবদের মারছে, সরকারের কি কেউ নাই তা দেখার।”