Monday, September 15, 2025
Homeআন্তর্জাতিকঅনলাইন ক্লাসই কাল হলো কিশোরের, জাপানি ওয়েব সিরিজের অনুকরণ!

অনলাইন ক্লাসই কাল হলো কিশোরের, জাপানি ওয়েব সিরিজের অনুকরণ!

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়েই দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধ স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভারতেও চালু রয়েছে অনলাইন ক্লাস। তবে এতে উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও হচ্ছে শিশু-কিশোরদের।

অনলাইন ক্লাসের জন্য হাতে পাওয়া মোবাইলসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে শিশু-কিশোররা আসক্ত হয়ে পড়ছে ইউটিউবের বিভিন্ন কার্টুন ও ওয়েব সিরিজে। এতে তাদের মানসিকসহ বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছে।

এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এল ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।  আসুন জেনে নিই আসল ঘটনা।

ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত হয় বিরাজ পাচিশিয়া নামে এক কিশোর! এরপর বহুতল ভবনের ১১ তলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ গেল তার। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের ফুলবাগানের একটি অভিজাত আবাসনে এই ঘটনা ঘটে। আবাসনের সুইমিং পুলের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিরাজের মরদেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ দেখার পরই বহুতলের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে ওই কিশোর।

‘ফুলবাগানের ক্যানাল সার্কুলার রোডের বাসিন্দা বিরাজ। পার্ক সার্কাসের একটি নামী স্কুলের ছাত্র সে। সরস্বতী পুজা নিয়ে বাড়িতে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন সকলের নজর এড়িয়ে ছাদে চলে যায় বিরাজ। এর কিছুক্ষণ পরেই আওয়াজ পেয়ে সুইমিং পুলের কাছে ছুটে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা দেখেন, বিরাজের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে মাটিতে। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’

‘পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট কিনে দেওয়া হয়েছিল বিরাজকে। ওই গ্যাজেট নিয়েই সারাদিন পড়ে থাকতে সে। গ্যাজেটটি উদ্ধার করে একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, ‘প্ল্যাটিনাম অ্যান্ড’ নামক ওই জাপানি সিরিজ দেখেই ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিরাজ।

ফুলবাগান থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ওই সিরিজে দেখানো হয়েছে- কিশোর নায়ক ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয় এবং তাকে বাঁচায় এক ‘দেবদূত’। এরপরেই ওই কিশোর ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হয়। এই গল্প দেখেই হয়তো ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে বিরাজ। অতীতেও দেখা গিয়েছে, ব্লু হোয়েল, পাবজি’র মতো মোবাইল গেম খেলায় মেতে প্রাণ গিয়েছে বহু শিশু-কিশোরের। ইদানিং শিশুদের মধ্যে আচরণগত নেশা বাড়ছে বলে জানান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, “সিগারেট, মদ্যপানের মতো বা কেমিক্যাল নেশার মতোই আচরণগত নেশা হয়ে থাকে। মোবাইলে গেম খেলা বা কোনও ছবি-সিরিজ বা সিরিয়াল দেখার নেশা এই পর্যায়ে পড়ে। মহামারীর মধ্যে দেখা গিয়েছে, অনলাইন ক্লাস চলাকালীন আলাদা উইন্ডো খুলে অন্য কাজ করছে বাচ্চারা। আগে বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলো করত, এখন মোবাইলে গেম খেলে। বাচ্চারাও নিজেদের প্রমাণ করতে চায়, ওদের মধ্যেও পারিপার্শ্বিক চাপ থাকে। এসব থেকেই ওরা ঝুঁকি নেয়।”

‘বাবা-মায়েদের উদ্দেশে তার পরামর্শ, ‘‘অনলাইন ক্লাস এবং শিশুদের মোবাইল ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের আরও সজাগ হতে হবে। সন্তান মোবাইল নিয়ে কী করছে, না-করছে, মাঝে মাঝে একটু দেখে নেওয়া জরুরি। সন্তানের ডিজিটাল ডিটক্স অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য মা-বাবার উচিত, সন্তানকে আরও সময় দেওয়া। তাদের সঙ্গে গল্প করা। বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে খেলাধুলো বন্ধই হয়ে গিয়েছে। তাই মাঝে মধ্যে শিশুদের বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়াও জরুরি।” সূত্র: আনন্দবাজার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments