Sunday, September 14, 2025
Homeআন্তর্জাতিকপলাতক সাবেক রাষ্ট্রদূত খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় আটক

পলাতক সাবেক রাষ্ট্রদূত খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় আটক

জেলহত্যা মামলার আসামি ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর (অব.) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে আটক করেছে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বুধবার মালয়েশিয়ার আমপাং, সেলাঙ্গর নামক এলাকার ১১ ব্লক বি ২ এর ৭ নম্বর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে আটক করা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের খাতায় পলাতক থাকা এই খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত ছিলেন।

বিনা কারণে মালয়েশিয়ায় আটকের দাবি করে খায়রুজ্জামানের আইনজীবী সেদেশের ইমিগ্রেশন বিভাগকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘আমরা অভিবাসন বিভাগকে জানাতে চাই যে মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান (UNHCR কার্ড নং 354) -10C02267) নামের বাংলাদেশি নাগরিককে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ কোনো যুক্তিসঙ্গত এবং যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়াই আটক করেছে।’ মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে আটক করার কোনো কর্তৃত্ব ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নেই এবং আমরা অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে আহবান করছি তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে। কারণ ইউএনএইচসিআর কার্ডধারী হিসেবে মালয়েশিয়ায় থাকার অধিকার তার রয়েছে।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন মেজর (অব.) এম খায়রুজ্জামান।

১৯৭৯ সালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আত্তীকৃত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকাকালে তাকে ফিলিপাইন থেকে ফেরত এনে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে অবসর দেওয়া হয়।

‘২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৪ সালে ট্রায়াল কোর্টে জেলহত্যা মামলা থেকে খায়রুজ্জামানকে খালাস দেওয়া হয়। তবে মামলা চলাকালেই ‘নজিরবিহীন’ ভাবে তাকে পদোন্নতি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে তাকে ‘সসম্মানে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। ২০০৫ সালে তাকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদেও নিয়োগ দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের আগস্টে তাকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার করা হয়।’

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি এম খায়রুজ্জমানকে কুয়ালালামপর থেকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর ওই বছরের ৩ জুলাই পর্যন্ত ছুটির আবেদন করেন তিনি। ৪ জুলাই থেকে তার এলপিআরে যাওয়ার কথা ছিল।

‘তবে সরকার তার ছুটির আবেদন অগ্রাহ্য করে ৮ মার্চের মধ্যে দেশে ফিরতে আদেশ দেয়। দেশে ফেরার আদেশ পেয়ে ২৪ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব ত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হন। সরকার এরপর তার পাসপোর্ট বাতিল করে।

তাকে দেশে ফিরতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সরকারের খাতায় এতদিন পর্যন্ত পলাতক ছিলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রদূত।

খায়রুজ্জামানের স্ত্রী ‘রিটা রহমান সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। বিএনপির জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের প্রধান ছিলেন এই রিটা রহমান। পরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেন। রিটা রহমানের পিতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments