পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান। দেশটির ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সরকার প্রধান যাকে এভাবে ক্ষমতা হারাতে হলো।
শনিবার দিনভর নানা নাটকীয়তার পর দিনের একেবারে শেষ প্রান্তে পার্লামেন্টে এ বিষয়ে ভোটাভুটি শুরু হয়। তার আগে পদত্যাগ করেন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭২টি।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) আয়াজ সাদিক মধ্যরাতে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। পিএমএল-এন মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, সভাপতিত্ব করায় সাদিক তার নিজের ভোট দিতে পারেননি আর ইমরানের দল পিটিআইয়ের ভিন্নমতের এমপিরা ভোটদানে বিরত থাকেন।
এদিকে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বর্তমানে পার্লামেন্টে বিরোধী জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি আবার তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই। তবে ৭০ বছর বয়স্ক শাহবাজ রাজনীতিবিদের চেয়ে প্রশাসক হিসেবে বেশি কার্যকর বলে পরিচিত।
তিনি দীর্ঘ দিন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে কাজ করেছেন। ইমরান হঠাও আন্দোলনে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছেন।বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সাথে শাহবাজের সুসম্পর্ক রয়েছে, যা নওয়াজের সাথে ছিল না।
ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের জেনারেলরা দেশটির বেসামরিক সরকার উৎখাতে অন্তত তিনবার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
শাহবাজ হলেন ধনী শরিফ পরিবারের অংশ। তিনি সরাসরি ’ক্যান-ডু’ প্রশাসনিক স্টাইলের জন্য সুপরিচিত। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় তিনি বেইজিংয়ের তহবিলপুষ্ট প্রকল্পগুলোতে চীনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।
তিনি গত সপ্তাহে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখব। তার এই মন্তব্য ইমরান খানের মন্তব্যের বিপরীত।
প্রসঙ্গত, শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
সূত্র : আল জাজিরা