৯ মে রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিনকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে মস্কো। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে জয় পায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)।
- বিশেষ করে ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin) ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি সামরিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে বড় পরিসরে পালিত হয়। এ বছরও ইউক্রেন যুদ্ধে(Ukraine War) মারিউপোলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রই নিয়ে মস্কো দিবসটি পালন করতে চায়। সে লক্ষ্যে তারা দেশটির দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে হামলা বাড়িয়েছে।
ইউক্রেন আক্রমণ
২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ‘নাৎসি’মুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে দোনবাস অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
প্রথমে পর্যায়ে রাজধানী কিয়েভসহ বড় বড় শহরে হামলা করলেও পরে লক্ষ্য পরিবর্তন করে দোনবাস অঞ্চল ‘মুক্ত’ করার ঘোষণা দেয় ক্রেমলিন। এরই মধ্যে বন্দরনগরী আজভস্টল ইস্পাত কারখানা অঞ্চলে প্রবল প্রতিরোধের মুখে রাশিয়া। কয়েক সপ্তাহর লড়াইয়ে ওই নগরীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেও ওই কারখানার দখল পায়নি তারা। সম্প্রতি সেখানকার কর্তৃত্ব নিতে টানা আক্রমণ করছে রুশ বাহিনী।
এই অবস্থায় জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বেসামরিকদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বৃহস্পতিবার তাদের অন্তত ৫০০ ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবারও চলে এ অভিযান। খবর রয়টার্স
এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার এটি সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। এরই মধ্যে তাদের বিজয় দিবস চলে আসছে। এ বছর এই দিবস পালনের জন্য তাদের বড় জয় দরকার। তাই এ দিবসের আগে হামলা জোরদার করে মারিউপোলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং উগ্র শেতাঙ্গবাদী আজভ ব্যাটালিয়নকে পরাজিত করতে চায় ক্রেমলিন।
মূলত পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রুশপন্থিদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এই উগ্রবাদীদের ‘নব্য নাৎসি‘ হিসেবে দেখে রাশিয়া। যুক্তরাজ্য বলছে, ইস্পাত কারখানা ঘিরে দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। কারণ, মারিউপোল দখল করে ৯ মের আগে প্রতীকী বিজয় চান পুতিন।
এরই মধ্যে রাশিয়ার পারমাণবিক হামলা শঙ্কার অভিযোগ উঠলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। শুক্রবার ক্রেমলিন জানায়, তারা ইউক্রেনে পারমাণবিক হামলা চালাবে না। এ যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ না নিলেও কিয়েভকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার পাশাপাশি মস্কোর ওপর রেকর্ড নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কোণঠাসা করছে। গতকাল ভারী যুদ্ধাস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দেয় জার্মানি। সর্বশেষ রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে মস্কোর এ জ্বালানির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রকে এ বিধিনিষেধ মানতে কিছু সময় দিয়েছে সংস্থাটি।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেন, রুশ তেলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চূড়ান্তসীমা অতিক্রম করেছে ইইউ। এটি আমরা সমর্থন করি না।
রুশ জেনারেলকে হত্যা
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস খবর দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেসব গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে, তা বেশ ক’জন রুশ জেনারেলকে হত্যা করতে ইউক্রেনকে সহায়তা করেছে। তবে এ প্রতিবেদনকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এরই মধ্যে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনবিসি জানায়, রুশ নৌ শক্তির প্রতীক যুদ্ধজাহাজ রণতরী মস্কোভা ডুবিয়ে দিতেও কিয়েভকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল ওয়াশিংটন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে পেন্টাগন।