স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রত্যেকটা জেলা ও উপজেলায় একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব কেন্দ্রে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দেশের ৩০ জেলার মধ্যে ২৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই মেডিকেল অফিসার। দু’টি জেলায় থাকলেও প্রস্থান করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
এছাড়া পাঁচটি উপজেলায় কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে না। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনগণ কী স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে তা জানতে এই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আব্দুল হামিদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাটি করতে দেশের ১২৮টি সংস্থা ও তিন হাজার ৪২০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি বাদে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রতিষ্ঠানের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তেমন কোনো অবদান নেই। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে অবকাঠামো থাকলেও চরম জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
পরিসংখ্যান বলছে, ৩০টি জেলা-উপজেলার মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে না। এমনকি সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিও বাস্তবায়ন হয় না। এসব উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নে স্ট্যান্ডিং কমিটির কোনো মিটিংও হয় না। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসে একবার এই মিটিং হওয়ার কথা। এসব এলাকায় গরিব, খেটে খাওয়া মানুষ ও ভাসমান জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে (প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি) তাদের কোনো কার্যক্রম নেই।
এছাড়া গবেষণায় দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত নয়। এই সমস্যা উত্তরণে গবেষণাপত্রে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়েছে, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিত করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দুই মন্ত্রণালয়ে সমন্বিত উদ্যোগ এই পরিস্থিতির পরিবর্তন নিয়ে আসবে।