বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেসলার ২ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ও এ মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এ শেয়ার বিক্রি করে তিনি ৩৫৮ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছেন। চলতি সপ্তাহে সোম, মঙ্গল ও বুধবার টানা তিন দিন এসব শেয়ার বিক্রি করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথিতে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসির।
এর আগেও টেসলার শেয়ার বিক্রি করেছিলেন ইলন মাস্ক। সব মিলিয়ে গত এক বছরে টেসলার প্রায় চার হাজার কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করলেন তিনি। তবে সর্বশেষ শেয়ার বিক্রির কারণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে আর্থিক বাজারের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রিফিনিটিভের মতে, ইলন মাস্ক এখনো প্রায় ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে এককভাবে টেসলার সবচেয়ে বড় শেয়ারধারী হিসেবে বহাল আছেন।
চলতি সপ্তাহেই বিশ্বের শীর্ষ ধনীর মর্যাদা হারিয়েছেন ইলন মাস্ক। গত সোমবার তাঁকে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসনে অধিষ্ঠিত হন ফরাসি বিলাসপণ্যের কোম্পানি এলভিএমএইচের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বার্নার্ড আরনল্ট।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কেনার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই টেসলার শেয়ার বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেন ইলন মাস্ক। গত মাসে (নভেম্বর) তিনি টেসলার ৩৯৫ কোটি ডলার মূল্যের ১ কোটি ৯৫ লাখ শেয়ার বিক্রি করার কথা জানান। প্রায় ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনার কয়েক দিন পরেই এ তথ্য প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে টুইটার কেনা নিয়ে ইলন মাস্কের নানা কাণ্ডের কারণে টেসলার শেয়ারবাজারে গ্রহণযোগ্যতা কমেছে বলে মনে করা হয়। বিনিয়োগকারীরা মাস্কের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। এ কারণে চলতি বছর শেয়ারবাজারের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে টেসলার শেয়ারের দাম সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরে টেসলার শেয়ারদর অর্ধেকের বেশি কমেছে। শুধু গত সোমবারই কমেছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এর আগে দুই বছরে অবশ্য টেসলার শেয়ারদর ১ হাজার শতাংশ বেড়েছিল।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার টেসলার সব শেয়ারের দাম ৫০ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে যায়। ২০২০ সালের পর এই প্রথম টেসলার শেয়ারের দামের এমন অবনমন ঘটেছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক সূচক নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান নাসড্যাক। গত বছরের শেষে টেসলার শেয়ারের মূল্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল।
গত অক্টোবরে টুইটারের মালিকানা কেনার সময় ইলন মাস্ক টেসলার কয়েক শ কোটি ডলার মূল্যের শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। এর পর থেকে টেসলার গ্রহণযোগ্যতা ধারাবাহিকভাবে কমছে।
এদিকে অর্থনীতির দুর্বল অবস্থার কারণে বিনিয়োগকারীরাও পড়েছেন নতুন চিন্তায়। তাঁদের ধারণা, অর্থনীতিতে দুর্বলতার কারণে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা কমে যেতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য কোম্পানিতে তাঁদের বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।