Monday, September 15, 2025
Homeজাতীয়বিশেষ সংকেতের অপেক্ষায় ইসলামী দলগুলো

বিশেষ সংকেতের অপেক্ষায় ইসলামী দলগুলো

সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় জামায়াতসহ ইসলামিক দলগুলো। টার্গেট সরকারের পদত্যাগ। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনড় বিরোধীরা। সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা। বিগত সময়ে জামায়াত ও কয়েকটি ইসলামী দল পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করলেও এবার সরকারবিরোধী দলগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে এক জোটে মাঠে নামতে চায়।

বিশেষ সংকেতের’ অপেক্ষায় ইসলামী দলগুলো। সংকেত পেলে ঢাকায় লাগাতার কর্মসূচিরও চিন্তা করছেন নেতারা। বিএনপি’র চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন জামায়াত নেতারা। উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল। রাখছেন আন্দোলন কেন্দ্রিক যোগাযোগ।

  • এদিকে বিএনপি সমমনা অন্যান্য ইসলামী দলগুলোও শিগগিরই মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনের আগেই সরকারের পতন নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। চলতি মাসেই নির্বাচনী সরকার ব্যবস্থার একটা সমাধানে পৌঁছাতে চান তারা। সর্বাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে খুব শিগগিরই একসঙ্গে মাঠে নামার প্রস্তুতি রয়েছে দলগুলোর।
  • চূড়ান্ত আন্দোলনের লক্ষ্যে অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা। তাদের দাবি হেফাজতে ইসলাম নির্বাচনে না থাকলেও আন্দোলনে প্রভাব ফেলবে। দলটির শীর্ষ কয়েক নেতা এখনো কারাবন্দি। তাদের মুক্তির দাবিতে সরকারকে একাধিকবার আল্টিমেটাম দিলেও কোনো লাভ হয়নি। এতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নানাভাবে প্রভাব ফেলবে হেফাজত এমনটাই মনে করছেন কেউ কেউ।

জামায়াতের দাবি, সারা দেশের নেতাকর্মীদের নামে ১৬ হাজার ৩৭৯টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ। বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন ১ হাজার ৭১০ জন। যার মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ পুরুষ, ৫২ জন মহিলা, ছাত্র ২৯৪ জন এবং ছাত্রী ২০ জন। আটক নেতাদের মধ্যে দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন।

জামায়াত নেতারা বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র সঙ্গে দূরত্ব কমেছে। যোগাযোগও আছে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শিগগিরই লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা আসতে পারে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় শূরা কমিটির একাধিক নেতা জানান, গত কয়েক মাসে সারা দেশে প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কর্মসূচি পালন করেছেন দলটির নেতারা। এরমধ্য দিয়ে সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতির কাজ সেরেছেন তারা।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং সব ভোটারের অংশগ্রহণে। সবাই যাতে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন সে ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ২০১৪ ও ১৮ সালে গোটা জাতির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। এর থেকে যদি বের হয়ে আসতে হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারপর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এর জন্য তাদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, এই সরকারের অধীনে তারা কোনো নির্বাচনে যাবেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। যা আগামীতে আরও জোরদার হবে। এই আন্দোলনে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার, হত্যা ও গুমকে তারা নির্যাতন ও জুলুম হিসেবেই নিয়েছেন। এটাকে মোকাবিলা করেই তারা আন্দোলন সফল করবেন।

এদিকে সংসদ ভেঙে দেয়াসহ জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নেমেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সম্প্রতি সময়ে সারা দেশে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। আগামী ১৩ই অক্টোবর ঢাকায় শ্রমিক সমাবেশ ও ২০শে অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র ও যুব সমাবেশ করবে দলটি। ২০শে অক্টোবরের সমাবেশ থেকে লাগাতার কর্মসূচির চিন্তা করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। তারা বলছেন, এবার সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে না ইসলামী আন্দোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এককভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের। এজন্য সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি রয়েছে দলটির।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। দেশে কোনো নির্বাচনী পরিবেশ নেই। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সে লক্ষ্যে আমরা আন্দোলনে আছি। আমাদের একের পর এক কর্মসূচি আসবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মসূচি দিতে পারেন নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে খেলাফত মজলিস। আগামী ১৪ই অক্টোবর ৮ দফা দাবিতে রাজধানীত মহাসমাবেশ করার কথা রয়েছে দলটির। মহাসমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে দলটির। সরকারের পতনের দাবিতে এদিন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে খেলাফত মজলিসের। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আরও বেশ কয়েকটি দল।

Source:mzamin

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments