টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এবার ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী ক্যাম্পের একটি মসজিদে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি। এ ঘটনায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আজ রবিবার ভোরের দিকে মসজিদের কমপাউন্ডে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের আস্তানা লক্ষ্য করে এই হামলা চালানোর দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
- ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে অবস্থিত আল-আনসার মসজিদে হামলায় হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের বেশ কয়েকজন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। তারা হামলার পরিকল্পনা করার জন্য কমান্ড সেন্টার হিসেবে ওই ভবনটিকে ব্যবহার করে আসছিল।
- বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য মসজিদটিকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হামলায় মসজিদের বাইরের অংশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসছেন।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে এটি ইসরায়েলের দ্বিতীয় বিমান হামলা। অবশ্য গাজার মসজিদগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা খুবই সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে এবং সর্বশেষ দুদিন আগে ইসরায়েলের হামলায় ধসে পড়েছে গাজার একটি ঐতিহাসিক মসজিদ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের এ নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি। গাজায় বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখের বেশি।
যদিও ইসরায়েল দাবি করছে, তারা হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাসের যোদ্ধাদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার বেসামরিক মানুষ।
এ অবস্থায় মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে মিসরের রাফাহ সীমান্তে দিয়ে ২০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে কায়রো। কিন্তু গাজার ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির জন্য এই ত্রাণকে মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা পানি বলছে জাতিসংঘ।