ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সম্পর্ক খুবই গভীর উল্লেখ করে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন,শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন রন্ধ্রে-রন্ধ্রে লুকিয়ে থেকে গণহত্যার বিচার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘৃণাস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছিল সেটি মুছে দেওয়া হচ্ছে। যারা শহীদদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করছে তারাই এগুলো করছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মিথ্যার পরাজয় হয়েছে। আমরা শেখ হাসিনার দাম্ভিকতা দেখেছি। তাকে আহ্বান করেছিলাম যে, ফেরাউন-নমরুদের পতন হয়েছে। আপনি জুলুম করছেন, অত্যাচার করছেন, লুটপাট করছেন, মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। আপনারও পতন হবে, আপনি সাবধান হয়ে যান। কিন্তু তিনি সাবধান হননি। ফলশ্রুতিতে তাকে বাংলাদেশ থেকে ছাত্রজনতার প্রতিবাদ এবং রক্ত ও জীবনের প্রতিবাদের মুখে পলাতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এখন চোখে সরিষা ফুল দেখছে। তারা এখন কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না।
আরও পড়ুনঃ সচেতন মুসলমান দুষ্কর্ম করতে পারে নাঃ জামায়াত আমির
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, এক সময় ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবির ট্যাগ দিয়ে পিটিয়েছে। এমনকি ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে তারা পুলিশের কাছে দিয়ে আসতো। তখন প্রতিবাদের ভাষা আমরা জাগিয়ে রেখেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সংকটকালীন সময়ে আমরা বক্তব্য দিয়েছি যে, একজন শিক্ষার্থী কোন দল করবে সেটি তার বিষয়।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ছাত্রলীগ ডাকসুতে একটি আইন করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছে ক্যাম্পাসে ইসলামী ভাবধারার কোনো সংগঠন চলবে না। আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল যেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের রাজনীতি না চলে। কিন্তু আমরা তাতে সায় দেইনি। বিশ্ববিদ্যালয় যদি বাম ও সেক্যুলারিজমের চর্চা হতে পারে তাহলে কেন ইসলামী আন্দোলন বা ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা চর্চা হতে পারবে না? জাতীয় নির্বাচনের আগে বুয়েটের ২৪ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেজন্য আমরা তখন কর্মসূচি পালন করেছিলাম। তার অপরাধে আমাকে গ্রেপ্তার করে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। রিমান্ডে আমাকে বলা হয়েছে, ‘তারা শিবির করত তুই জানিস না’? উত্তরে আমি বলেছিলাম, সবার আগে পরিচয় হচ্ছে আমরা সবাই শিক্ষার্থী।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, কিলার মাস্টারমাইন্ড যারা ছিলেন তাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বদলি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার আমলের ঘনিষ্ঠ মাস্টারমাইন্ডরা এখনো প্রশাসনে আছে। আমরা এখনো সংকটের মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগ মানে আওয়ামী লীগ নয়। আওয়ামী লীগ মানে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ। আওয়ামী লীগ মানে বিজেপি উগ্র হিন্দুত্ববাদ। অতীতে আমরা দেখেছি, বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। কিন্তু এখন আমরা এমনটি চাই না। আমরা বিচার চাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় যারা শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে দিয়েছে তারা এখনও সরকারে। ৬২৬ জনকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিরাপদে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে।
সদস্য সম্মেলনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সারাদেশের সদস্য এবং জামায়াতে ইসলামীর ঊর্ধ্বতন নেতারা অংশ নিয়েছেন।