Sunday, September 14, 2025
Homeরাজনীতিবৈষম্যবিরোধীরা শহীদ মিনারে গণজমায়েত করবে

বৈষম্যবিরোধীরা শহীদ মিনারে গণজমায়েত করবে

পূর্বঘোষিত ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে সেখান থেকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে না। বরং ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ তৈরির যে উদ্যোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, সেটির পক্ষে অবস্থান নিয়ে ঘোষণাপত্রটি কেমন হবে তা জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার দিনগত রাত ১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ।

আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান রক্ত দিয়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আতিক গাজীর হাতের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমার ভাইদের চোখের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। এই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমার হাজারো ভাইয়ের শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। আমরা এই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছি। আমরা রাষ্ট্রকে বলেছি, আমাদের যেন এ ব্যাপারে সমর্থন দেওয়া হয়। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বলেছি, এই ব্যাপারে যেন আমাদের সমর্থন জানায় এবং এই ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। কারণ ঘোষণাপত্র ঐতিহাসিক দলিল। এই ঐতিহাসিক দলিলকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এই ঐতিহাসিক দলিলের মধ্য দিয়ে বস্তাপচা রাজনীতির অবসান হবে। কিন্তু সেই ঐতিহাসিক দলিল যাতে আমরা উপস্থাপন করতে না পারি, সেজন্য বিভিন্ন ধরনের বাধার সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে বিজয় লাভ করেছি। সরকার আমাদের এই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে ইতিবাচক কথা বলেছে। সরকার এই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা অবশ্যই শহীদ মিনারে একত্রিত হবো। আমার পূর্ববর্তী যে কর্মসূচি দিয়েছি, সেই কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা বিপ্লবীরা সেখানে একত্রিত হবো। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র আসবে, কিন্তু তাই বলে আমাদের একত্রিত হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে না। আমাদের আহত থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যরা এবং ঢাকা শহরের মা-বোনেরা যেভাবে গত ৫ আগস্ট রাস্তায় নেমে এসেছিল, সেভাবে আমাদের ঘোষণাপত্রে ব্যাপারে শহীদ মিনারে অবস্থান নেবে।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা সারা ঢাকা শহরের মানুষকে বলবো, এই ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরকার একটি পেরেক মেরে দিয়েছে। তারা আমাদের ঘোষণাপত্রকে গ্রহণ করেছে। তারা বলেছে, সরকারের জায়গা থেকে তারা ঘোষণাপত্র দেবে। কিন্তু আমরা আগামীকালকে সারা দেশের মানুষকে রাজপথে নেমে এসে এই ঘোষণাপত্রের পক্ষ শক্তি প্রদর্শন করতে ব

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ঢাকা শহরের প্রতিটি বাড়ি ঘর থেকে মানুষ নেমে এসে, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে শপথ নিয়েছিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল। আগামীকাল সেই গণঅভ্যুত্থানে অংশীদারের জায়গা থেকে ঢাকা শহরের প্রতিটি মানুষ রাস্তায় নেমে এসে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের পক্ষে আমাদের সমর্থন জানাবে। আমরা আগামীকাল ৫ আগস্টের মতো একটি গণজোয়ার দেখতে পাবো। সরকার ঘোষণাপত্রের পক্ষে যে অবস্থান নিয়েছে সেই অবস্থানকে সমর্থন জানাবো। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ষড়যন্ত্র করে ঘোষণপত্রের পথ বন্ধ করে দিতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের একাত্তরের ঘোষণাপত্র আছে, চব্বিশের ঘোষণাপত্রও হবে। সেটা সরকারের পক্ষ থেকে হবে এবং মানুষ আগামীকালই সেটার পক্ষে সমর্থন জানিয়ে দেবে। আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ঘোষণাপত্রের পক্ষে একটি মিছিল করবো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রের পক্ষে আগামীকাল এদেশের মানুষ অবস্থান নেবে এবং এই ঘোষণাপত্র কিভাবে হবে সেটা আমরা আজ সেখানে (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার) বলে দেবো।

এর আগে সোমবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে। গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।

তার আগে শনিবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই দিন বিকেল তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে এ ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা জানান তারা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments