অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩৪বার বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে অন্তত ৭১ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
গাজার মিডিয়া অফিস এই হামলাগুলোকে ‘ভয়াবহ অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ওমর আল-দিরাউই, যিনি মধ্য গাজার আজ-জাওয়াইদা এলাকায় নিজ বাড়িতে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে প্রাণ হারান। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক তিনি।
এদিকে, মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, হামলায় ওই এলাকার বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
গাজার খান ইউনুসের কাছে আল-মাওয়াসি নামক এক তথাকথিত মানবিক অঞ্চল-এ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
আরও পড়ুন: গাজায় হাসপাতালের বাইরে ৫ সাংবাদিক নিহত
নিহতদের মধ্যে তিনজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে ছিল। তাদের বয়স সাত থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। এই ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ বলেছে, শিশুদের জন্য এখন কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়—না বোমা থেকে, না ঠান্ডা, রোগ বা ক্ষুধা থেকে। এই ধ্বংসযজ্ঞ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
বহুদিনের প্রতীক্ষার পর জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি মানবিক দল সম্প্রতি উত্তর গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। তারা সেখানে বিধ্বস্ত হাসপাতাল এবং পানি, খাদ্য ও স্যানিটেশনবিহীন হাজারও মানুষের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেছে।
জাতিসংঘের দলটি জানিয়েছে, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি ঘটছে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় অন্তত ৪৫ হাজার ৫৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। হামলায় আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়াও ধ্বংস হয়েছে উপত্যকার সিংহভাগ ঘরবাড়ি, হাসপাতাল। তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন গাজার লাখ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধগণ।