Sunday, September 14, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা

গাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা

গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মন্ত্রিসভা। এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা রক্তক্ষয়ের অবসান হওয়ার পথ খুলছে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামীকাল রোববার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা।

 

আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ভোরের দিকে ইসরায়েলের জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদন পায়। এর আগে টানা ছয় ঘণ্টা বৈঠক করেন নেতানিয়াহু সরকারের মন্ত্রীরা। নেতানিয়াহুর দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চুক্তির (ফ্রেমওয়ার্ক) অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। রোববার থেকে এটা কার্যকর হবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে।

এদিকে গাজায় ৪৬০ দিনের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৬ হাজার ৭৮৮ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর জোট সরকারের মন্ত্রিসভার ২৪ সদস্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৮ জন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া আট মন্ত্রীর মধ্যে দুজন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির। তাঁরা হলেন ডেভিড আমসালেম ও আমিচাই চিকলি। এ ছাড়া একই দলের সালোমো কারহি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির। তিনি একটি উগ্র ডানপন্থী দলের নেতা। একই দলের আরও দুজন যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ উগ্র ডান দল জায়োনিজম পার্টির নেতা। তিনিসহ দলটি থেকে মন্ত্রী হওয়া আরও দুজন যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পরও গাজায় হামলা, নিহত ৩০

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করার পরিপ্রেক্ষিতে জোট সরকার ছাড়ার হুমকি দিয়েছে ইতামারের রাজনৈতিক দল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় আড়াই শ জনের বেশি মানুষকে। তাঁদের মধ্যে অনেককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় হামাসের কাছে এখনো ৯৮ জন জিম্মি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন।

হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ।

যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে, তা তিন ধাপে কার্যকর করা হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হবে ছয় সপ্তাহের। এ সময় ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকা ১৯ বছরের কম বয়সী নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ সময় গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর একটি অংশকে সরিয়ে নেওয়া হবে।

এরপর শুরু হবে যুদ্ধ বিরতির দ্বিতীয় ধাপ। এই ধাপে ইসরায়েলের বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। এর বিপরীতে আরও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া হবে। আর তৃতীয় ধাপে ইসরায়েলের কাছে মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে এবং গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।

দেশ-বিদেশের সর্বশেষ সংবাদের আপডেট পেতে দৈনিক সচেতন বার্তাকে ইনস্টাগ্রামে ফলো করুন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments