নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনের ঘটনায় শুক্রবার আরও ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। শুক্রবার দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কারখানার ভেতর থেকে মরদেহগুলো একের পর এক বের করে আনেন। এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দীন মনি জানান, শুক্রবার কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। আগুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম ব্যাপারীকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাত তলা ভবনের ছয় তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও সাতটি ইউনিট।
কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ-আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সকাল ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা পর শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক শ্রমিক বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কারখানার নিচতলায় আগুন লাগে। আগুন ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এ সময় পুরো ভবন অন্ধকার হয়ে যায়। কেউ কেউ ছাদে আশ্রয় নেন। অনেকে লাফ দেন ছাদ থেকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার আগুনে তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন, স্বপ্না আক্তার (৪৫), মীনা আক্তার (৪১) ও মোরসালিন (২৮)।