সম্প্রতি জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার ৫০ শতাংশ টাইমস্কেল বহাল রাখাসহ তিন দফা দাবি তোলা হয়েছে। এ দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছেন। রোববার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়করণ শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানবন্ধন থেকে দাবি আদায় না হলে লাগাতর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত বছরের আগস্টে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে শিক্ষকদের টাইমস্কেল বন্ধ করতে বলা হয়। বর্তমানে যারা অবসরে যাচ্ছেন তাদের এ অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে না। ৭৪ বিধি মোতাবেক শিক্ষকদের টাইমস্কেলের অর্থ প্রদান করা হলেও সেটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি বহাল রাখতে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে সেটি বিচারাধীন রয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা জানান, জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৭ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার পর সেসব শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার ৫০ শতাংশ টাইমস্কেল প্রদান করা হয়।
তারা বলেন, প্রথমিক শিক্ষকদের টাইমস্কেলের অর্থ প্রদান, জাতীয়করণ হওয়া সহকারী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি ও প্রধান শিক্ষকদের উন্নতি স্কেল প্রদানের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এসব দাবিতে জেলা পর্যায়ে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও তাতে আমলে নেওয়া হয়নি। এ কারণে শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমবেত হয়েছেন বলে জানান।
জাতীয়করণ শিক্ষক মহাজোটের আহ্বায়ক আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের টাইমস্কেল বন্ধ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা জারির পর থেকে আমরা নানাভাবে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করে আসছি। এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়েরও করা হচ্ছে। দাবি বাস্তবায়নে সারাদেশের শিক্ষকরা এক হয়ে মানববন্ধনে যুক্ত হয়েছেন। তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, আজকের আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের তিন দফা বাস্তবায়নে সরকারকে আহ্বায়ন জানানো হবে। আমরা আশা করবো দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। সেটি না হলে ডিসেম্বর থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জাতীয়করণ ৩৭ হাজার শিক্ষকের উপস্থিতিতে লাগাতর কর্মসূচি শুরু করা হবে।
এর আগেও গত তিন বছর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উচ্চতর গ্রেডের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান নিয়ে লাগাতর আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষকদের এ আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে ক্লাসে ফেরান।