পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) কোম্পানির প্রায় দুইশো কোটি টাকা আত্মসাতকারী পি কে হালদারের প্রতারক দুই নারী সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আল আমিন।
তিনি বলেন, পিএলএফএসএল কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পিকে হালদার ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার আছেন। তার দুই নারী সহযোগী বাংলাদেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল। এরই ভিত্তিতে পিকে হালদারের দুই নারী সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের নাম প্রকাশ না করা হলেও এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের নাম প্রকাশ না করা হলেও এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
দেশের আর্থিক খাতের শীর্ষ জালিয়াত পিকে হালদারের (প্রশান্ত কুমার হালদার) ১৫ বান্ধবী ও ঘনিষ্ঠ নারীদের ব্যাংক হিসাবে অন্তত ৮৬৭ কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। উপহার, গাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনে দেওয়া, দেশে-বিদেশে ভ্রমণসহ বিভিন্ন অজুহাতে ঋণের নামে তাদের এ অর্থ দেওয়া হয়। পিপলস লিজিংসহ চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের এ অর্থ নারীদের নামে-বেনামের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
আরও জানা গেছে— কখনো ঋণের নামে, কখনো বিনোদন ভাতার নামে আবার কখনো অবৈধ টাকা আড়াল করতে পিকে হালদার এসব কাজ করেন। কোনো কোনো বান্ধবীর নামে ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর ছাড়াও ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি কিনে দিয়েছেন। আবার কাউকে দেশে-বিদেশে পাঁচতারকা হোটেলে নিয়ে আনন্দ-ফূর্তিও করেছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলে পিকে হালদারের এক বান্ধবী দেশ ছেড়ে কানাডায় পালিয়ে যান। তিনি এখন পিকে হালদারের নিয়ন্ত্রণেই ওই দেশে আছেন। বান্ধবীদের নামে অর্থকড়ি খরচের পাশাপাশি নিজেকে আড়ালে রাখতে আর্থিক জালিয়াতিতে পিকে হালদারের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও সহকর্মীদেরও ব্যবহার করেন।
কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গত ১৪ মে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার ভারতে গ্রেফতার হন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাকে গ্রেফতার করে দেশটির অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে পি কে হালদার সেখানে অবৈধভাবে সম্পত্তি কিনেছেন, এমন অভিযোগের পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত বছরের ১৩ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মানিলন্ডারিং আইনের মামলার ওইদিনই তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই বছরের ১৬ মার্চ বিকেলে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেফতার হন পি কে হালদারের আরেক বান্ধবী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাই। দুদক জানায়, পি কের টাকা পাচারের অন্যতম সহযোগী নাহিদা রুনাই। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হচ্ছে তার সব হিসাব রাখতেন রুনাই।