১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিন থেকে শুরু। সেই থেকে প্রতিবছর জাতিসংঘ আয়োজন করে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন, কনফারেন্স অব পার্টিজ বা সংক্ষেপে কপ। মাঝে ২০২০ সালে কভিড মহামারির জন্য কপ হতে পারেনি।
এ বছর প্রথমবারের মতো কপের আসর বসেছে আফ্রিকায়, মিসরের পর্যটন শহর শার্ম-এল-শেখে।প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কপের জন্য সেখানে হোটেলভাড়া বেড়েছে দু-তিন গুণ, বিমানভাড়াও বেড়েছে। বেশ ভালো আয় হচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।বলাই বাহুল্য, কপ আয়োজনের ফলে মিসরীয় সরকারেরও আয় ভালো হচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে অনেকগুলো। মিসরে কাজের কাজ কি কিছু হয়েছে? জলবায়ু সংকট থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর কী হলো? একটা জলবায়ু সম্মেলনকে কখন সফল বা ব্যর্থ বলা হয়, আর কপের এবারের আয়োজনই বা কোনদিকে এগোচ্ছে?
প্রথমবারের মতো আলোচ্যসূচিতে স্থান পাওয়া ক্ষয়ক্ষতি তহবিল যদি চূড়ান্তভাবে আসত, তবে তা হতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় ‘মিসরীয় উপহার’। তবে তা যে এবারের সম্মেলনে হচ্ছে না সেটা পরিষ্কার। উন্নত ও ধনী দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়নের পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভট ও জটিল পদ্ধতি নিয়ে আসছে, যেমন বীমা। কোনো কোনো উন্নয়নশীল দেশ অবশ্য তাতেই খুশি। কেউ কেউ খুশি ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে যে অল্প পরিমাণ টাকা এসেছে তা নিয়েই। কিন্তু যে অল্প কিছু টাকা বিভিন্ন উন্নত দেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই না। পাকিস্তানে এ বছর বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্যও আরো বেশি টাকা লাগবে। এই পরিমাণ অর্থের প্রতিশ্রুতির জন্য এত অর্থ ও সময় ব্যয়ে দুই সপ্তাহের জলবায়ু সম্মেলন আয়োজনের দরকার হয় না।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দুই দেশ জলবায়ু সহযোগিতা অব্যাহত রাখলে তা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হতে সাহায্য করবে—এ মত জলবায়ু সংগঠন ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জেফরি হুং-অয়শিংয়ের।