সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদারের প্রায় ৭৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনেরও প্রমাণ পেয়েছে দুদক। একই সঙ্গে বিরুদ্ধে ৪৯ ব্যাংক হিসাবে প্রায় তিন হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার দুদকের মামলা দুইটি দায়ের করেন ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২০ আগস্ট হেনরীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয় এবং ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার থেকে স্বামীসহ তিনি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। গত ২৫ নভেম্বর দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জান্নাত আরা হেনরী, তাঁর স্বামী এবং মেয়ের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক এমপি হেনরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ সাত হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এছাড়া, তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা। হেনরী অবৈধভাবে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন করার উদ্দেশ্যে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে দুই হাজার দুই কোটি ৬৬ লাখ ৫৭৭ টাকা এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার মার্কিন ডলারের (১১৫ টাকা হিসাবে প্রায় ১৫৮৫ কোটি টাকা) সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক থাকার সময়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে হেনরী অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা, দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২), ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরেকটি এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি জান্নাত আরা হেনরী তাঁর স্বামী মো. শামীম তালুকদার লাবুর অপরাধলব্ধ অর্থ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি তাঁর ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।