Sunday, September 14, 2025
Homeজাতীয়চেয়ারম্যান-মেয়র পদে থাকছে না প্রত্যক্ষ ভোট

চেয়ারম্যান-মেয়র পদে থাকছে না প্রত্যক্ষ ভোট

শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি * ইউপি সদস্যদের ভোটে চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের মেয়র ভোটে নির্বাচিত হবেন * সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন ইউপি সদস্য, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর।

 

স্থানীয় সরকার কাঠামোর জনপ্রতিনিধিদের জন্য এবার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার সুপারিশ করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। পৌরসভা-সিটি করপোরেশনের মেয়র ও ইউনিয়ন-উপজেলা-জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিতরা নির্বাচন করতে পারবেন না। এসব পদে নির্বাচিত হতে লাগবে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি।

আরও পড়ুনঃ বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি ১/১১ চাচ্ছে : নাহিদ ইসলাম

এ ছাড়া ওই পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য থাকবে না সরাসরি ভোটের বিধানও। তবে সরাসরি ভোটের বিধান বলবৎ থাকবে ইউপি সদস্য (মেম্বার) নির্বাচনে।

মাঠ পর্যায়ে মতামত নেওয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে এমন সুপারিশ করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। এখন চলছে সংকলন কার্যক্রম।

এরপর আরেক দফা যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।

সংস্কার কমিশনের প্রধান স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সারা দেশ থেকে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, দল-পেশিশক্তি ও টাকা-পয়সার কারণে শিক্ষিত লোকজন জনপ্রতিনিধি হতে পারেন না। নিরক্ষর লোকদের দাপটে সজ্জন, গুণী ও শিক্ষিতরা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

নিরক্ষর লোক যেন জনপ্রতিনিধি হতে না পারেন, শিক্ষিতরা জনপ্রতিনিধি হতে আগ্রহী হন এবং বিজয়ী হয়ে আসতে পারেন– এমনভাবে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হবে; কিন্তু ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার কোনো মানদণ্ড সংবিধানে উল্লেখ নেই। ভোটে অংশগ্রহণে তাদের বাদ দেওয়ারও সুযোগ নেই। এ জন্য কৌশলী হতে হচ্ছে কমিশনকে।

জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যদের (মেম্বার) ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। আর ইউপি সদস্যরা ভোট দিয়ে একজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন। চেয়ারম্যানকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। তা না হলে তিনি চেয়ারম্যান হতে পারবেন না।

একইভাবে ইউপি সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে সভাধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হবে। তাকেও স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। একই পদ্ধতিতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় সরাসরি ভোটে মেয়র নির্বাচিত হতে পারবেন না।

আরও জানা গেছে, কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে মেয়র ও সভাধ্যক্ষ নির্বাচিত হবেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেয়রদের দায়িত্ব হবে সার্বক্ষণিক। ইউপি চেয়ারম্যানদের বেতন হবে উপজেলা পর্যায়ের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সমান।

পৌরসভার মেয়রের বেতন হবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমান। সিটি করপোরেশনের মেয়রের বেতন হবে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপরে। চেয়ারম্যান বা মেয়রদের কেউ স্নাতক ডিগ্রিধারীর নিচে হতে পারবেন না।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা ও জেলা পরিষদে প্রায় একইভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। ইউপি, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে একটি ছায়া পরিষদ থাকবে। তারা ইউপি সদস্য বা কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন। তারা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন সভাধ্যক্ষরা। সেখানে উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রণয়নসহ লেজিসলেটিভ (আইনি) অংশ দেখবেন।

আর চেয়ারম্যান-মেয়ররা নির্বাহী বিভাগের কার্যক্রম তদারকি করবেন। স্থানীয় সরকারে উপদেষ্টা বা কোনো পদে থাকতে পারবেন না সংসদ সদস্যরা (এমপি)। সভায় উপস্থিত হয়ে শুধু মতামত দিতে পারবেন। কমিশন মনে করে, এমপিদের প্রভাবের কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। তারা এমপিনির্ভর হয়ে পড়েছিলেন।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকারে জাতীয় সংসদের মতো স্থায়ী কমিটি থাকবে। প্রতিটি উপজেলাকে তিন বা ততোধিক ওয়ার্ডে ভাগ করে স্থানীয় সরকারের সদস্যদের মধ্য থেকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। সদস্যদের কোনো নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না। তারা পরিকল্পনা ও প্রকল্প প্রণয়ন করবেন।

দেশ-বিদেশের সকল সংবাদের আপডেট জানতে দৈনিক সচেতন বার্তাকে   Facebookএ ফলো করুন।
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments