Tuesday, September 16, 2025
Homeজাতীয়অপরাধরাবি শিক্ষার্থীর মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাত, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

রাবি শিক্ষার্থীর মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাত, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার মাথায় আঘাত করে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুর্বৃত্তদের আটকের দাবিতে শুক্রবার রাত পৌনে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ১২টা) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।

এদিকে এ ঘটনার পরই রাবির প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত মহসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় ফিরোজ তার বান্ধবীকে নিয়ে স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। তখন কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে পাশেই হবিবুর হলের মাঠে নিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছে থাকা ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। চিৎকার করলে ফিরোজকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আশেপাশের লোকজন ফিরোজকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, মারধরের শিকার শিক্ষার্থীর নাম ফিরোজ। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নেয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওটিতে নেওয়া হয়। তার মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে এবং তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
অর্থনীতি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ফিরোজ তার বান্ধবীকে হলে এগিয়ে দিতে যাচ্ছিল। এমন সময় তাদের হবিবুর রহমান হলে যেতে রাস্তা থেকে মোটরসাইকেলে করে এসে ঐ দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়ে যায় এবং মোবাইল ও টাকা-পয়সা দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে না পারলে তখন তার মাথায় আঘাত করা হয়।

হাসপাতালে ফিরোজের সঙ্গে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এস এম মোখলেসুর রহমান মিলন ভুক্তভোগীর বান্ধবীর বরাত দিয়ে বলেন, ফিরোজ ও তার বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে একটি কম্পিউটার দোকানে কাজ করে ফিরছিল। তখন মোটরসাইকেলে দু’জন এসে তাদের পথ আটকে দাঁড়িয়ে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ফিরোজ মোবাইল দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছিনতাইকারীরা তাকে হাতুড়ি জাতীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে একপর্যায়ে মোবাইল ফেলে রেখে ছিনতাইকারীরা চলে যায়।

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে, দ্বিতীয়ত ১২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি ধরতে হবে, তৃতীয়ত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, চতুর্থত বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, খুব দ্রুত আমরা বিচার চাই। না হয় আন্দোলন বেগতিক হবে। আমরা জানি প্রশাসন চাইলে আসামি ধরা সম্ভব। কিন্তু প্রশাসন প্রতিবারই দায় এড়িয়ে যায়। এবার আর সে সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা বিচার নিয়েই ফিরবো।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ঐ দুর্বৃত্তরা বহিরাগত না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তা এখনও জানা যায়নি। তবে তারা ছিনতাই করতে আসেনি। ছিনতাই করলে তারা টাকা পয়সা কেড়ে নিতো। কিন্তু সেটাও করেনি। মাথায় আঘাত করেছে। তবে কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে নয়। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি কোনো ধরণের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। দাবি জানাতেই পারে খুব স্বাভাবিক। আমরা তাদের দাবি মানবো।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments