রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল মামুন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন
ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনকারী ডিআইজি প্রিজন (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ এর ঘুষ কেলেঙ্কারীর ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে কারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা ধরনের গুঞ্জন ছিল। এই ঘুষ কেলেঙ্কারীর মহানায়ককে গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোর মধ্য দিয়ে গুঞ্জন থেকে তৈরী হওয়া ক্ষোভ কিছুটা স্তিমিত হয়েছে।
অবৈধভাবে তিন কোটি ৮ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গ্রেফতার কারা অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) হেডকোয়ার্টার্স, বজলুর রশীদকে আজ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল মামুন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
এর আগে, অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর অভিযোগে রবিবার বেলা ১১টা থেকে বজলুর রশীদ ও তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দুদক। এ সময় তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি দুদকের নজরে আসে।
এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম বজলুর রশীদকে গ্রেফতার করে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন ও সালাউদ্দিন আহমেদ।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘুষের টাকা লেনদেন করতে বজলুর রশীদ নিজের ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে মোবাইল ফোনের সিম কেনেন। সরাসরি টাকা না পাঠিয়ে ঘুষ চ্যানেলের মাধ্যমে তিনি টাকার আদান-প্রদান করতেন।
প্রসঙ্গত, ‘বেপরোয়া ডিআইজি প্রিজনের ঘুষ কাণ্ড, স্ত্রী কুরিয়ার সার্ভিসে নেন কোটি কোটি টাকা’ শিরোনামে ৬ অক্টোবর যুগান্তরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সে সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, এত বড় ঘুষ কারবারের চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করাসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন।
৯ অক্টোবর ২০১৯ (বুধবার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বজলুর রশীদের বিষয়ে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, এর সবই তদন্ত করতে বলা হয়েছে। ‘তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলওয়ার বখত সাংবাদিকদের বজলুর রশীদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪’র ২৭ (১) ধারা অনুযায়ী মামলা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি