২০১৪ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল আইএস প্রধান বাগদাদি। সেই সময় থেকেই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিল। গত পাঁচ বছর ধরে তার পিছু পিছু ঘুরছেন মার্কিন বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে সাফল্য পেলেন তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত শনিবার রাতভর জল্পনা জিইয়ে রেখে রবিবার সকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন সেনার অভিযানে ‘কুকুরের মতো মৃ্ত্যু হয়েছে বাগদাদির’। তার পর থেকেই অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলি এই খবর নিয়ে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই স্রোতেই ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথমে সেই খবর প্রকাশ করে ‘টেররিস্ট ইন চিফ’ বা শীর্ষ সন্ত্রাসীর মৃত্যু। পরে সেটি পাল্টে লেখা হয়, ‘উগ্র ধর্মগুরু’।
বিতর্ক শুরু এই দ্বিতীয় শিরোনাম নিয়েই। এই শিরোনাম প্রকাশিত হতেই সারা বিশ্ব থেকে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে নিশানা করে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। আমেরিকায় ট্রাম্পপন্থীরা ওয়াশিংটন পোস্টকে তীব্র আক্রমণ শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শুরু হয় ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ, কটাক্ষ, শ্লেষ। প্রশ্ন ওঠে, এই রকম কুখ্যাত এক জন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিকে কী ভাবে ‘ধর্মগুরু’ বলল ওয়াশিংটন পোস্টের মতো নির্ভরযোগ্য একটি সংবাদমাধ্যম। ওই শিরোনামে কার্যত বাগদাদির গুণকীর্তন করা হয়েছে এবং ওই শব্দবন্ধে কার্যত তার কুখ্যাত রূপ ঢাকা পড়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াও ঝাঁপিয়ে পড়ে ওয়াশিংটন পোস্টের পিছনে। #wapoDeathNotice এবং #WashingtonPost টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। সেখানে সারা বিশ্বের বাস্তবের কুখ্যাত ব্যক্তিদের মৃত্যু সংবাদ নিয়ে রসিকতা চলতে থাকে। হিটলার, ওসামা বিন লাদেনের মতো ব্যক্তিদের মৃত্যুর খবর কী রকম হতে পারত (ওয়াশিংটন পোস্টের শিরোনামের মতো হলে) কিভাবে হওয়া উচিত ছিল, তা বুঝিয়ে দেন নেটিজেনরা।
এর পরেই তড়িঘড়ি সেই দ্বিতীয় শিরোনাম ফের পরিবর্তন করে দেয় ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ কর্তৃপক্ষ। সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস কোরাত্তি টুইটারে লেখেন, আল বাগদাদির মৃত্যু সংবাদ নিয়ে আমাদের এই শিরোনাম (দ্বিতীয় শিরোনাম) এমন হওয়া উচিত ছিল না। আমরা খুব দ্রুত সেটা পাল্টে দিয়েছি।’ পরে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধিরা বছরের পর বছর ইরাক-সিরিয়ায় কাটিয়েছেন। আইএস-এর বর্বরতা নিয়ে তারা খবর করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তড়িঘড়ি লেখা ওই শিরোনামে বাগদাদি ও আইএস-এর সেই নৃশংসতা ঠিকভাবে প্রকাশ পায়নি। তবে সেটা দ্রুত পাল্টে দেওয়া হয়েছে।
যদিও এতেও বিতর্ক থামেনি। টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরছে ওই শিরোনামের স্ক্রিন শট। তাই দিয়েই মুহূর্মুহূ পোস্ট, কমেন্টস আছড়ে পড়ছে সোশাল মিডিয়ায়।