Saturday, September 13, 2025
Homeচট্টগ্রাম সিটিচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় জালিয়াতি আটক ১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় জালিয়াতি আটক ১

অভিনব পদ্ধতিতে টেলিগ্রাম ও ১৬ হাজার টাকা মূল্যের চায়না ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে জালিয়াতি করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের ৫৩২ নম্বর কক্ষ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। এরপর তাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযুক্ত জোবায়ের আহমেদ সিয়ামের বাড়ি পাবনা জেলার আমিরপুর থানায়। তিনি পাবনা সরকারি বুলবুল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।

জানা যায়, অভিনব পদ্ধতিতে টেলিগ্রাম ও ১৬ হাজার টাকা মূল্যের চায়না ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে জালিয়াতি করেন তিনি। একপর্যায়ে তার পেছনের সিটে বসা একটি মেয়ে বিষয়টি দেখে হল পরিদর্শককে জানান।

জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বেরিয়ে আসা তথ্য অনুযায়ী এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আরও দুইজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- সিয়ামের খালাতো ভাই ফুয়াজ খান ফিয়াম ও ফিয়ামের বন্ধু মেহেরান। জানা যায়, ফিয়াম ঢাকার মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী। এবং মেহেরান পড়ছে নটরডেম কলেজে।

এর আগেও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সিয়াম। পুরো প্রক্রিয়াটি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও সিয়ামের মুঠোফোন পরীক্ষা করে বের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তার মুঠোফোন পরীক্ষা করে প্রক্টরিয়াল বডির উতঘাটন করা অভিনব জালিয়াতি প্রক্রিয়া 

চট্টগ্রামে চাকরিরত তার বড় ভাইকে নিয়ে ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে আসে সিয়াম। পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগমুহূর্তে নিজের মুঠোফোন ভাইয়ের কাছে দিয়ে ভাইয়ের দামি স্মার্টফোনটি নিয়ে হলে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর মোবাইলের সঙ্গে ক্যাসিও কোম্পানির এফএক্স-৮২ এমএস মডেলের ক্যালকুলেটরের অনলাইন সংযোগ ঘটান তিনি। মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে টেলিগ্রামের মাধ্যমে ঢাকায় অবস্থানরত ফুয়াজ খান ফিয়াম ও মেহেরানের কাছে পাঠিয়ে দেন তিনি। তারা সেখান থেকে সিয়ামের কাছে উত্তর পাঠালে সেটি ক্যালকুলেটরে দেখতে পান সিয়াম। একপর্যায়ে ক্যালকুলেটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পুনরায় টেলিগ্রামের মাধ্যমে জালিয়াতি চালিয়ে যান তিনি। তার টেলিগ্রামে বিকেল ৩টা ৩১মিনিট থেকে ৪টা ১মিনিট পর্যন্ত ৮ বার ফিয়ামের সঙ্গে কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে।

পরীক্ষা চলাকালে নির্ভয়ে জালিয়াতি করে যাচ্ছিল সিয়াম। হাঁটুরভাঁজে মোবাইল রেখে একের পর এক উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু তার পেছনের সিটে থাকা এক মেয়ে পরীক্ষার্থী সিয়ামকে জালিয়াতি করতে দেখে ফেলে। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি হল পরিদর্শকদের বিষয়টি জানিয়ে দেন। পরে পরিদর্শকরা সত্যতা পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে ব্যাপারটি অবহিত করেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এফএক্স-১০০ মডেলের নিচে সব ধরনের ক্যালকুলেটর ব্যবহারে অনুমোদন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই মডেলের ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে জালিয়াতি করা সম্ভব নয় বলে সকলের ধারণা। কিন্তু এফএক্স-৮২ মডেলের ক্যালকুলেটরে কিভাবে জালিয়াতি করা সম্ভব জানতে চাইলে সিয়াম জানান, এটি চায়না থেকে আমদানিকৃত ক্যালকুলেটর। যা বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এবং এর মূল্য ১৬ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে চবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র জানান, এ ধরণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম নেই। আমরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments