রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল আজ। নগরীর মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ৩৬০ জন কাউন্সিলরের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন।
নতুন নেতৃত্বের প্রহর গোনার সময়ও ফুরিয়ে আসছে, তারই সাথে নেতাকর্মীদের মনের অন্তরালেই বাড়ছে উত্তেজনা। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। মহানগরী, পৌর ও উপজেলা এলাকার সর্বত্রই রং-বেরঙ্গের ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুনে ভরে গেছে।
দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লার চায়ের দোকান গুলোতেও আলোচনার একটিই বিষয়, কারা আসছে নতুন নেতৃত্বে। সবকিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক সহাবস্থানের শহর, শান্তিপ্রিয় মানুষের শান্ত নগরী রাজশাহীতে চলছে যেন উৎসবেরই আমেজ।
প্রথমে সম্মেলন, পরে কেন্দ্রীয় নেতারা ঘোষণা করবেন জেলা কমিটির নতুন নেতৃত্বের নাম।
জেলা কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতি নিশ্চিত না হলে সম্মেলনের উদ্বোধন ও প্রধান অতিথি হবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ।
দলীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে থাকা ডজন খানেক নেতার মধ্যে কে কোন পদের নেতৃত্বে আসবেন, তা আগাম কেউই ধারণা করতে পারছেন না।
কারণ দেশের অধিকাংশ জেলায় দলের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ও ঘোষণাতে। রাজশাহীতেও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক নেতাকর্মীরাই। কেন্দ্রের ঘোষণাতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হওয়ায় জেলা কমিটির শীর্ষ পদগুলো পেতে আগ্রহীরা শুক্রবার রাত পর্যন্ত তদবিরে ছিলেন ব্যস্ত।
সভাপতির পদ প্রত্যাশীর তালিকায় প্রবীণরদের পাশাপাশি রয়েছেন বেশ কজন নবীনরাও। সভাপতি হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা, লায়েব উদ্দিন লাভলু, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক এমপি রায়হানুল হক, বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মোকবুল খান, অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদার, আখতার জাহানের নাম নেতাকর্মীদের আলোচনায় এসেছে।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আয়েন উদ্দিন এমপি, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, আহসানুল হক মাসুদ, অধ্যাপক আসাদুজ্জামান, আদিবা আনজুম মিতা এমপি, গোলাম ফারুকের নামও আলোচনায় আছে।
এদিকে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলকে ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলা সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি। শুক্রবার রাতে জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ সভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র এডিসি গোলাম রুহুল কুদ্দুশ জানান, এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নাশকতা বা জঙ্গি হামলার মতো কিছু ঘটার আশঙ্কার কোন খবর আমাদের কাছে নেই।
নাশকতার আশংকার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ সচেতন বার্তাকে বলেন, ‘নাশকতার আশঙ্কার বিষয়টি আমার কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। কারণ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন সব উপকমিটি। সম্মেলনের সমন্বয়ক রাজশাহীর কৃতী সন্তান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সব প্রস্তুতি সরাসরি তদারক করছেন। কিন্তু সভাপতি কেন এ ধরনের রহস্যজনক কথা বলেছেন সেটি তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটবে আজই, আর এই দিনে আওয়ামীলীগ এর মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সহ শান্তিকামী নগরবাসীর কামনা সুষ্ঠ সুন্দরভাবে সমাপ্ত হবে ঐতিহাহিক ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজশাহী জেলার নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কর্মসূচী।